কোষ্ঠকাঠিন্য একটি পরিচিত সমস্যা ।প্রায় অনেকেই এই রোগে ভুগে থাকেন সাধারণত পায়খানা কষা বা শক্ত হওয়াকে কোষ্ঠকাঠিন্য বলা হয়। অনেক লোকেরই মাঝে মাঝে পায়খানা খুব শক্ত হয়ে যায় ,পায়খানা করার সময় অনেকক্ষণ বসে থাকতে হয় ।এছাড়া পায়খানার পর মনে হয় পেট ঠিকমতো পরিষ্কার হয়নি।
কোষ্ঠকাঠিন্য হলে পায়খানা শক্ত হয়ে যায় ফলে পায়খানা করার সময় অনেকেই ব্যথা অনুভব করতে পারেন ।কারো কারো ক্ষেত্রে একটানা কয়েকদিন পায়খানা নাও হতে পারে এগুলো সবই সাধারণত কোষ্ঠকাঠিন্যের লক্ষণ।
দীর্ঘদিন কোষ্ঠকাঠিন্য হলে এনাল ফিসার বা গেজ রোগ কিংবা পাইলস বা অর্শ রোগের মত রোগ তৈরি হতে পারে। আপনি যদি কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার কারণ জানতে পারেন এবং কিছু নিয়ম মেনে চলেন তাহলে খুব সহজেই এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
আজকের পোস্টে আমরা জানবো কোষ্ঠকাঠিন্য কী?, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ঘরোয়া উপায়, কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণ, কোষ্ঠকাঠিন্যের লক্ষণ, কোষ্ঠকাঠিন্যের প্রতিকার
কোষ্ঠকাঠিন্য কী?
সাধারণত সপ্তাহে তিনদিন পায়খানা না হলে তাকে কোষ্ঠকাঠিন্য বলা হয় ।
কোষ্ঠকাঠিন্যের লক্ষণ:
কোষ্ঠকাঠিন্যের কিছু লক্ষণ রয়েছে যেমন:
১.শক্ত পায়খানা হওয়া
২. পায়খানা বা মলের আকার সাধারণের চেয়ে বড় হওয়া
৩. পায়খানা বা মলত্যাগ করতে কষ্ট হওয়া
৪. মনে হয় যেন পেট এখনো পরিষ্কার হয়নি
৫. পেটে ব্যথা, বমি বমি ভাব
কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণ:
কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণগুলো নিচে উল্লেখ করা হলো:
১.পানি কম খাওয়া
২.আশ যুক্ত খাবার কম খাওয়া
৩.শারীরিক ব্যায়াম কম করা বা সারাদিন শুয়ে বসে থাকা
৪.অন্ত্রনালির ক্যান্সার
৫.দীর্ঘদিন শয্যাশায়ী থাকা
৬.পায়খানার বেগ আসলে তা চেপে রাখা
৭.মানসিক চাপ বা বিষন্নতা
৮.এছাড়া কোন ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসেবে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে
কোষ্ঠকাঠিন্যের প্রতিকার:
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ঘরোয়া উপায়
কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে বাঁচতে হলে যেসব কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য হয় সেগুলো এড়িয়ে চলতে হবে। আসুন জেনে নেই কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে :
১. বেশি বেশি পানি পান করা:
কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে রক্ষা পেতে হলে বেশি বেশি পানি পান করার কোন বিকল্প নেই। সারাদিনের কমপক্ষে দেড় থেকে ২ লিটার পানি পান করতে হবে
২. আঁশযুক্ত খাবার খাওয়া:
যে সকল খাবারে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার বা আঁশ রয়েছে এমন খাবার খেতে হবে। যেমন সবুজ শাকসবজি, ফলমূল, ডাল,লাল আটা ,লাল চাল ইত্যাদি।
ফাইবার বা আঁশযুক্ত খাবার খাওয়ার ক্ষেত্রে একটি বিষয় অবশ্যই মনে রাখতে হবে যেন হঠাৎ করে অধিক পরিমাণে ফাইবার বা যুক্ত খাবার খাওয়া না হয় তাহলে হতে পারে বিভিন্ন রকমের সমস্যা যেমন পেট ফাঁপা, তলপেটে তীব্র ব্যথা, বায়ুর সমস্যা ইত্যাদি।
৩. ইসবগুলের ভুষি:
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার জন্য ইসবগুলের ভুষি খাওয়া খুবই উপকারী।এটি একটি চমৎকার ঘরোয়া ঔষধ। এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে ইসুবগুলের ভুষি পানির সাথে মিশিয়ে দিনে দুইবার খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
৪. শরীরচর্চা বা ব্যায়াম:
প্রতিদিন কিছু না কিছু শরীরচর্চা বা হালকা ব্যায়াম করতে হবে এতে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
৫. পায়খানার বেগ আসলে চেপে রাখা যাবে না:
কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে বাঁচতে হলে পায়খানার বেগ আসলে তা কোনভাবেই চেপে রাখা যাবে না ।
পায়খানার বেগ চেপে রাখলে হতে পারে এনাল ফিসার বা পাইলসহ বিভিন্ন ধরনের রোগ।
৬.মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল রাখা:
কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে বাঁচতে হলে মানসিক স্বাস্থ্য দিকে খেয়াল রাখতে হবে। উদ্বেগ কিংবা বিষন্নতায় ভুগলে অবশ্যই তার চিকিৎসা নিতে হবে।
৭. ঔষধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া:
কিছু ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে কারো কারো ক্ষেত্রে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে। যদি এমনটা হয় তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত। চিকিৎসক প্রয়োজনে ঔষধ বদলে দিতে পারেন।
৮. অন্ত্রনালির ক্যান্সার:
অন্ত্রনালির ক্যান্সারের কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। তাই কোষ্ঠকাঠিন্য যদি ঘরোয়া উপায়ে ভালো না হয় অতি দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। ডাক্তার কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণ খুঁজতে পারবেন এবং চিকিৎসা দিতে পারবেন।
পরিশেষে, উপরের নিয়ম গুলো মেনে চললে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
আরো পড়ুনঃ
Zinc Rich Foods: জিংক সমৃদ্ধ ১১টি খাবার ।জিংক এর কাজ ,অভাবজনিত রোগ, লক্ষণ এবং জিংকের উপকারিতা
Acne : ব্রণ দূর করার ১২ টি ঘরোয়া উপায়
পাইলস থেকে মুক্তি পান অপারেশন ছাড়া । পাইলসের ঘরোয়া চিকিৎসা
Anal Fissure: এনাল ফিসার কী।এনাল ফিসার থেকে মুক্তির উপায়
Pneumona : নিউমোনিয়া কি?কারণ,লক্ষণ, চিকিৎসা এবং প্রতিরোধের জন্য করনীয়।
অণ্ডকোষে ব্যথার কারণ : Causes of Testicular Pain
২০২৪ সালে চুল গজানোর জন্য ৮ টি প্রাকৃতিক চুলের চিকিৎসা টিপস
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন